সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বিশ্বের ‘প্রাচীনতম’ গণতন্ত্র আমেরিকা। তাই ‘গণদেবতা’র অধিকার রক্ষায় দারুণ তৎপর ‘আঙ্কল স্যাম’। তবে জীবনবিমার মতো খুদে অক্ষরে অবশ্যই এক্ষেত্রে রয়েছে কিছু ‘টার্মস এন্ড কন্ডিশন’। যেমন অস্ত্র ক্রেতাদের মানবাধিকার লঙ্ঘন মাফ। ‘সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে লড়াই’য়ে মিত্রপক্ষের হত্যালীলা নায্য। যাই হোক, ফের সাংবাদিক জামাল খাশোগ্গি হত্যায় মিত্র সৌদি রাজপরিবারের, বিশেষ করে যুবরাজ মহম্মদ বিন সলমনের (এমবিএস) পাশে দাঁড়ালেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।
[‘লাদেন অতীত’, মার্কিন দাবড়ানিতে সাফাই পাকিস্তানের]
সদ্য খাশোগ্গি হত্যায় বিস্ফোরক খোলসা করে কুখ্যাত মার্কিন গুপ্তচর সংস্থা সিআইএ। সংস্থাটির দাবি, স্পষ্ট ভাষায় খাশোগ্গির ‘মুখ বন্ধ’ করার নির্দেশ দিয়েছিলেন এমবিএস। সেই নির্দেশ মেনেই ঘাতক বাহিনী হত্যা করে সৌদি রাজপরিবারের সমালোচক খাশোগ্গিকে। তবে সিআইএ-র রিপোর্ট পাওয়ার পরও ট্রাম্পের দাবি, এই ঘটনায় এমবিএস-এর সরাসরি যুক্ত থাকার কোনও প্রমাণ মেলেনি। উল্লেখ্য, ওয়াশিংটন পোস্ট’-এর কলমচি ছিলেন। তুরস্কের রাজধানী ইস্তানবুলে সৌদি আরবের কনসুলেটের ভিতরে তাঁর হত্যাকাণ্ড ঘটেছে। এরকম ঘটনা সচরাচর শোনা যায় না। বিদেশে নিজের দেশের কনসুলেটে গিয়ে কাউকে খুন হতে হচ্ছে, এটা কল্পনারও অতীত। কিন্তু ইস্তানবুলের মাটিতে ওই নৃশংস ঘটনা ঘটেছে। খাশোগ্গিকে কনসুলেটের ভিতরে শেষবারের জন্য ঢুকতে দেখা গিয়েছিল। এক তুরস্কের বান্ধবীকে তিনি বিয়ে করতে চান, সেই কারণে বিবাহবিচ্ছেদ সংক্রান্ত কাগজপত্র জোগাড় করতে খাশোগ্গি কনসুলেটে গিয়েছিলেন। এরপর আর তাঁর কোনও সন্ধান পাওয়া যায়নি। তুরস্কের সরকারই প্রথম আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে ফাঁস করে দেয় যে, কনসুলেটের ভিতরে সৌদি আধিকারিক ও কর্মীরা খাশোগ্গিকে হত্যা করেছে।
কেন সৌদি রাজপরিবারের পাশে দাঁড়িয়েছে আমেরিকা?
সৌদি আরবের উপর নিষেধাজ্ঞা চাপানোর জন্য চাপ তৈরি হয়েছে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের উপর। ইউরোপীয় দেশগুলিও এই চাপের শরিক। সৌদি প্রশাসন অবশ্য ইতিমধ্যে ওয়াশিংটনের উপর পালটা চাপ দিতে শুরু করেছে। ১১০ বিলিয়ন ডলারের (টাকায় আট লক্ষ কোটি) অস্ত্র কেনার জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ সৌদি আরব। যদি খাশোগ্গিকে ঘিরে তাদের উপর নিষেধাজ্ঞা বলবৎ করার বিষয়ে ওয়াশিংটন উদ্যোগী হয়, তাহলে এই অস্ত্র সরবরাহ চুক্তিও বন্ধ হবে বলে পালটা হুমকি সৌদি আরবের। এতেই বিপাকে পড়েছেন ট্রাম্প। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র কিছুতেই সৌদির এই অস্ত্রের বরাতটি হারাতে চায় না। ট্রাম্প বলছেন, বিষয়টির সঙ্গে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের লক্ষ লক্ষ মানুষের কর্মসংস্থানের সমস্যাটি জড়িয়ে রয়েছে। যদি সৌদির অস্ত্রের বরাত হাতছাড়া হয়, তাহলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বহু মানুষ কাজ হারাবেন। ১১০ বিলিয়ন ডলারের অস্ত্র সৌদি আরব আগামী ১০ বছর ধরে আমেরিকার কাছ থেকে কিনবে। এই বিপুল পরিমাণ অস্ত্রের খুব সামান্যই এখনও পর্যন্ত আমেরিকা জোগান দিতে পেরেছে। মাঝপথে বরাত বন্ধ হলে বহু মার্কিন কোম্পানি সংকটে পড়বে। তাই আপাতত অস্ত্রের বেসাতিতে চাপা পড়ল সাংবাদিকের মরণযন্ত্রণা।
[OMG! প্রেমিককে কুচি কুচি করে কেটে রাঁধল মহিলা, মাংস কারা খেল জানেন?]
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.