সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: আমেরিকার হস্তক্ষেপেই সংঘর্ষবিরতিতে সম্মত হয়েছে ভারত-পাকিস্তান। ১০ মে এই দাবি করছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এই নিয়ে সপ্তমবার। ফের একবার তিনি বললেন, “দুই প্রতিবেশী দেশের মধ্যে এত রাগারাগি ঠিক নয়। আমরাই তো ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে শান্তি আনলাম। এটা আমেরিকার বড় জয়।” কিন্তু ভারত প্রথম থেকেই সাফ জানিয়ে দিয়েছে, অপারেশন সিঁদুরে বিপর্যস্ত হয়ে পাকিস্তানই হামলা থামানোর আর্জি জানিয়েছিল। তারপর সংঘর্ষ বিরতির পথে হাঁটে দিল্লি।
গত ২২ এপ্রিল কাশ্মীরের পহেলগাঁওয়ের বৈসরন উপত্যকায় নৃশংস হামলা চালিয়েছিল লস্কর জঙ্গিরা। ধর্মীয় পরিচয় জেনে গুলিতে ঝাঁজরা করে দিয়েছিল ২৫ পর্যটককে। তাঁদের বাঁচাতে গিয়ে প্রাণ যায় এক কাশ্মীরি যুবকের। নিহতদের স্ত্রীদের জঙ্গিরা বলেছিল, যাও গিয়ে মোদিকে বলো। এই হামলার ১৫ দিনের মাথায় সন্ত্রাসবাদীদের মোক্ষম জবাব দিয়ে দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। ৬ মে মাঝরাতে জঙ্গিদের ‘আঁতুড়ঘর’ পাকিস্তানে আঘাত হানে ভারতীয় সেনা। পালটা দেওয়ার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয় পাকিস্তান। তাদের ড্রোন হামলা প্রতিহত করে ভারতের শক্তিশালী প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা। ভারতের মারে বিধ্বস্ত হওয়ার পর আক্রমণ থামানোর আর্জি জানিয়েছিল পাকিস্তান। তারপর সন্ত্রাসবাদী কর্মকাণ্ড বন্ধ করার প্রতিশ্রুতির বিনিময়ে ইসলামাবাদের মিনতিতে সাড়া দেয় দিল্লি। ১০ মে সম্মতি জানানো হয় সংঘর্ষবিরতির।
ওইদিনই ট্রাম্প নিজের সোশাল মিডিয়া হ্যান্ডেলে জানিয়েছিলেন, “আমেরিকার সঙ্গে দীর্ঘ কথা বলার পর ভারত-পাকিস্তান সংঘর্ষবিরতিতে যেতে রাজি হয়েছে। পরমাণু শক্তিধর দুই দেশকে চাপ দিয়ে সংঘর্ষবিরতি করেছি। যুদ্ধ না থামালে বাণিজ্যেও না, হঁশিয়ারি দিয়েছিলাম। তাতেই কাজ হয়েছে।” ফের একই রেকর্ড বাজিয়ে গতকাল শুক্রবার তিনি বলেন, “আমার সরকারই ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে সংঘর্ষবিরতি করিয়েছে। যা হয়েছে তার জন্য আমরা খুব খুশি। ভারত আর পাকিস্তান একে ওপরের প্রতিবেশী। দু’জনের মধ্যে এত রাগারাগি ঠিক নয়। আপনি যদি দু’দেশের মধ্যে উত্তেজনার পারদ দেখেন আপনারও তাই মনে হবে। এটা আমেরিকার বড় জয়।”
বর্তমানে সৌদি সফরে রয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। সেখানেই সৌদির যুবরাজ মহম্মদ বিন সলমন, টেসলা প্রধান এলন মাস্ক ও মার্কিন বিদেশ সচিব মার্কো রুবিও’র উপস্থিতিতে ফের একবার ‘সম্ভাব্য পারমাণবিক যুদ্ধ’ থামিয়ে শান্তি প্রতিষ্ঠায় নিজের জয়গান গেয়ে ট্রাম্পকে বলতে শোনা যায়, “এই যুদ্ধ থামাতে আমাদের উপরাষ্ট্রপতি জেডি ভ্যান্স ও বিদেশ সচিব মার্কো রুবিও যথেষ্ট উদ্যোগ নিয়েছেন। আমার মনে হয় তারা(ভারত-পাকিস্তান) শত্রুতা ছেড়ে কাছাকাছি আসছে।” এরপর মার্কো রুবিওকে উদ্দেশ্য করে বলেন, “এই দু’জনকে একসঙ্গে কোনও ভালো জায়গায় সুন্দর ডিনারে পাঠালে বিষয়টা ভালো হয়। আপনি কী বলেন?” কিন্তু বিশ্লেষকরা বলছেন, আমেরিকা ‘বন্ধু’ হলেও তাদের এই হস্তক্ষেপ ভারত মেনে নেবে না।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.