সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: অবৈধ অভিবাসীদের জন্য দরজা বন্ধ হচ্ছে ব্রিটেনেরও। আমেরিকার পথে হেঁটে আরও কড়া অভিবাসন নীতির কথা ঘোষণা করলেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কিয়ের স্টারমার। সোমবার সে দেশের পার্লামেন্টে এনিয়ে বক্তব্য রাখেন তিনি। অভিবাসন নীতি আরও কড়াকড়ির পাশাপাশি নাগরিকত্ব প্রাপ্তির ক্ষেত্রেও নীতি বদলের পথে হাঁটছে ব্রিটেন। জানানো হয়েছে, এতদিন যে সময় ব্রিটেনে থাকলে নাগরিকত্ব মিলত, এবার তার চেয়ে দ্বিগুণ সময় কাটাতে হবে সে দেশে। প্রধানমন্ত্রী স্টারমার আশাপ্রকাশ করেছেন, এভাবে কড়া নীতি লাগু হলে আগামী চার বছরের মধ্যে ব্রিটেনে শরণার্থীর সংখ্যাও উল্লেখযোগ্যভাবে কমে যাবে।
সোমবার ব্রিটিশ পার্লামেন্টে এ বিষয়ে বক্তব্য রাখতে দিয়ে প্রধানমন্ত্রী কিয়ের স্টারমার বলেন, ”নতুন পরিকল্পনা অনুযায়ী, শরণার্থীদের প্রবেশের ক্ষেত্রেও বাছাই করা সম্ভব হবে। আমরাই ঠিক করতে পারব, কারা এদেশে আসবেন, থাকবেন আর কারা আসবেন না। কর্মক্ষেত্র, শিক্ষাক্ষেত্র এবং পরিবার নিয়ে বসবাস – সব ক্ষেত্রেই অভিবাসন আইন আরও কড়া হবে। সবটা আমরা নিজেদের নিয়ন্ত্রণে রাখব। এতদিন যা হচ্ছিল, তার তুলনায় রেকর্ড সংখ্যক অভিবাসী ও শরণার্থী প্রবেশ কমাতে হবে। সেই লক্ষ্যেই আমাদের নীতি আরও কড়া হচ্ছে।
স্টারমার প্রশাসনের নয়া নীতিতে এই মুহূর্তে ব্রিটেনে বসবাসকারী ভিনদেশিরা তো সমস্যায় পড়বেনই। বিশেষত নাগরিকত্ব পাওয়ার ক্ষেত্রে আরও কিছুটা সময় তাঁদের লড়াই করতে হবে। তবে সবচেয়ে সমস্যায় পড়ছে বিভিন্ন সংস্থা, যারা বিদেশি কর্মীদের উপর ব্যাপকভাবে নির্ভরশীল। স্টারমারের নতুন নীতি অনুযায়ী, বিদেশ থেকে কর্মীদের ব্রিটেনে চাকরিতে নিয়োগ করতে হলে সংস্থাগুলিকে বহুগুণ বেশি অর্থ ব্যয় করতে হবে। এখন সে দেশের ছোটখাটো সংস্থাগুলি ২৪০০ পাউন্ড দিয়ে কোনও বিদেশি কর্মী নিয়োগ করতে পারে। বড় সংস্থাগুলির ক্ষেত্রে তা ৬৫০০ পাউন্ডের বেশি। কিন্তু অভিবাসন নীতি কড়াকড়ির ফলে এই খরচ অনেকটাই বাড়বে। বিভিন্ন সমাজসেবামূলক কাজের সঙ্গে যুক্ত সংস্থাগুলি জানাচ্ছে, তাদের অধিকাংশই ভিনদেশি কর্মী। প্রশাসনের কড়া নীতিতে তাদের কাজকর্ম ধাক্কা খেতে পারে।
একইরকম সমস্যায় পড়তে চলেছে ব্রিটেনের কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় পড়াশোনা করতে যাওয়া ভিনদেশি পড়ুয়ারা। স্টারমার প্রশাসনের নতুন আইন লাগু হলে ব্রিটিশ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ভর্তি হতে খরচ অনেকটা বাড়বে। এছাড়া নতুন করও প্রযোজ্য হবে। ওয়াকিবহাল মহলের মত, আসলে এসবই ব্রিটিশ নাগরিকদের বাড়তি সুবিধা দেওয়ার কৌশল। ঠিক যেমনটা ঘটছে আমেরিকায়। মেধা, যোগ্যতা, দক্ষতা সত্ত্বেও কর্মী নিয়োগের ক্ষেত্রে আমেরিকার মতো ব্রিটেনও ভিনদেশি নয়, নিজেদের নাগরিকদেরই প্রাধান্য দিতে চাইছে স্টারমারের সরকার।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.