সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: তিনি গিয়েছিলেন রুশ অধিকৃত ইউক্রেনীয় ভূখণ্ডে। উদ্দেশ্য ছিল সেখানকার পরিস্থিতি কী তা বাকি বিশ্বকে জানানো। কিন্তু শেষপর্যন্ত তাঁকে বন্দি হতে হয় রুশ সেনার হাতে। অবশেষে ইউক্রেনের হাতে আসে তাঁর নিথর দেহ। তিনি ইউক্রেনীয় সাংবাদিক ভিক্টোরিয়া রশচিনা। ফরেনসিক তদন্তে দেখা গিয়েছে, ২৭ বছরের তরুণীর শরীরে রয়েছে অমানবিক অত্যাচারের চিহ্ন!
শরীর থেকে বের করে নেওয়া হয়েছে চোখের মণি, মস্তিষ্ক এবং শ্বাসনালি! শিউরে উঠেছেন ফরেনসিক বিশেষজ্ঞরা। রুশ সেনা ইউক্রেনের সাধারণ মানুষকে বন্দি করার পর তাঁদের উপরে কী ধরনের নির্যাতন করে, ভিক্টোরিয়ার পরিণতি তারই মর্মান্তিক প্রতীকী ছবি বলেই মনে করা হচ্ছে।
‘ইউক্রেনস্কা প্রাভদা’ নামের সংবাদমাধ্যমের সাংবাদিক ছিলেন ভিক্টোরিয়া। পত্রিকার সম্পাদক সেভগিল মুসাইয়েভা জানিয়েছেন, অত্যন্ত কাজপাগল এবং নিবেদিতপ্রাণ সাংবাদিক ছিলেন তিনি। রুশ অধিকৃত ইউক্রেনের ভূখণ্ড ঝাপোরজিয়ায় সাংবাদিকতার জন্য যাওয়াটাকে ‘মিশন’ বলে মনে করতেন। একাই তিনি সেখানে গিয়েছিলেন। কেউই ভাবতে পারেনি এমন পরিণতি হতে পারে তাঁর।
ভিক্টোরিয়ার দেহের ফরেনসিক তদন্ত করে দেখা গিয়েছে তাঁর উপরে অমানুষিক অত্যাচার হয়েছে। শরীরের নানা জায়গায় রক্তক্ষরণের চিহ্ন মিলেছে। ভাঙা পাঁজর, ঘাড়ে ক্ষত এবং পায়ে ইলেকট্রিক শক দেওয়া হয়েছে বলেও মনে করা হচ্ছে। এবং দেহটি ইউক্রেনের হাতে ফিরিয়ে দেওয়ার আগে ময়নাতদন্তও করা হয়েছিল। এবং সেই সময় তাঁর দেহ থেকে চোখের মণি, মস্তিষ্ক এবং শ্বাসনালি বের করে নেওয়া হয়। মনে করা হচ্ছে, মৃত্যুর কারণ আড়াল করতেই এমন করা হয়েছিল। রুশদের হাতে যুদ্ধবন্দি ইউক্রেনীয়দের উপরে অমানবিক অত্যাচার করা হচ্ছে, এই অভিযোগ বহুদিনের। এই পরিস্থিতিতে ২০২৩ সালে রুশ অধিকৃত ভূখণ্ডে কভার করতে গিয়ে নিখোঁজ হন ভিক্টোরিয়া। পরে মেলে তাঁর দেহ। দেহের ফরেনসিক তদন্তের রিপোর্ট হাতে আসার পর স্বাভাবিক ভাবেই চাঞ্চল্য তৈরি হয়েছে।
এই মুহূর্তে রুশ-ইউক্রেন সংঘর্ষ নতুন মাত্রা পেয়েছে। রশিয়া ড্রোন ও মিসাইল হামলা করেছে যথাক্রমে খারকিভ ও নিপরোতে। অন্তত একজনের মৃত্যু হয়েছে। আহত ৪৬। এই অবস্থায় সামলে এল রুশ সেনার হাতে ইউক্রেনীয় তরুণীর মর্মান্তিক পরিণতির কথা।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.