সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: মঙ্গলবার মধ্যরাতের অপরেশন সিঁদুরের (Operation Sindoor) পরে বুধবারই প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং স্পষ্ট করেছিলেন, শুধু নিরীহদের হত্যাকারীদেরই শাস্তি দিয়েছে ভারতীয় সেনা। বেছে বেছে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে নয়টি জঙ্গিঘাঁটি। যদিও রাষ্ট্রসংঘের কাছে পাকস্তানের নালিশ-সন্ত্রাসবাদীদের ডেরায় হামলার কথা মুখে বললেও ভারত আদতে হামলা চালিয়েছে অসামরিক জনবসতির উপরে। সেই প্রমাণ দিতে রাষ্ট্রসংঘের প্রতিনিধিদের পাক অধিকৃত কাশ্মীরের রাজধানী মুজফফ্রাবাদ ঘুরিয়ে দেখাল পাক প্রশাসন।
২২ এপ্রিল পহেলগাঁওয়ে হামলায় মৃত্যু হয় ২৬ জন নিরীহ সাধারণ মানুষের। পয়েন্ট ব্ল্যাঙ্ক রেঞ্জ থেকে স্ত্রী-সন্তানদের সামনে তাঁদের হত্যা করে পাক মদতপুষ্ট জঙ্গিরা। এই ঘটনার ঠিক দুই সপ্তাহ পরে মঙ্গলবার গভীর রাতে অপারেশন সিঁদুর (Operation Sindoor) অভিযান চালায় ভারতীয় বায়ুসেনা। পরিকল্পিত অভিযানে পাক অধিকৃত কাশ্মীর এবং পাকিস্তানের পাঞ্জাব প্রদেশের নয়টি জঙ্গি ডেরায় ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালানো হয়। হামলার ৮০ জনের বেশি জঙ্গির মৃত্যু হয়েছে। তাদের মধ্যে রয়েছে সংসদভবন হামলার মূলচক্রী হাফিজ সইদের পরিবারের ১০ সদস্য। শুরুতে ক্ষয়ক্ষতির কথা জানিয়ে পালটা হামলার হুঁশিয়ারি দিয়েছিল ইসলামাবাদ। পরে সুর অনেকটা নরম করে তারা।
বুধবার পাকিস্তানের তরফে এক বিবৃতিতে লেফটেন্যান্ট জেনারেল আহমেদ শরিফ চৌধরী জানান, ভারতের হামলায় ৩৭ জনের মৃত্যু হয়েছে, ৫১ জন আহত। উত্তেজনার আবহে কতকটা নয়াদিল্লির ঢঙে সেনাকে পূর্ণ ক্ষমতা দেওয়ার কথা ঘোষণা করেন পাক প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ। পরে ঢোক গিললে শাহবাজের পরামর্শদাতা রানা সানাউল্লা বিবৃতি দেন, যদি ভারত আর হামলা না চালায় তাহলে পাকিস্তানও কোনও দায়িত্বজ্ঞানহীন পদক্ষেপ করবে না।
ভারতীয় বায়ুসেনার অভিযানে মুজফ্ফরাবাদের দু’টি ঠিকানা ক্ষতিগ্রস্ত হয়। প্রথমটি নিয়ন্ত্রণরেখা থেকে প্রায় ৩০ কিলোমিটার দূরের সওয়াই নালায় লশ্কর-এ-তইবার কুখ্যাত শিবির। এক সময় এখানেই প্রশিক্ষণ নিয়েছিল ২৬/১১ সন্ত্রাসের অন্যতম জঙ্গি আজমল কাসভ। ভারতীয় গোয়েন্দাদের কাছে খবর ছিল, এখানেই পহেলগাঁও হত্যাকাণ্ডের আগে আশ্রয় নিয়েছিল টিআরএফ জঙ্গিরা। দ্বিতীয়টি কাছাকাছির মধ্যে মারকাজ সঈদনা বিলাল। এখানেই পাক জঙ্গিগোষ্ঠী জইশ-এ-মহম্মদের প্রশিক্ষণ শিবির। এদিন সেই জায়গাগুলিই অসামরিক আবাসিকদের বসবাসের জায়গা বলে ঘুরিয়ে দেখানো হয় রাষ্ট্রসংঘের প্রতিনিধিদের। এমনকী স্থানীয়দের দিয়ে বলিয়ে নেওয়া হয়, এখানে কোনও জঙ্গি শিবির ছিল না। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ভারতের মতো বড় শক্তির সঙ্গে সামরিক শক্তিতে ওঠা যাবে না আন্দাজ করেই রাষ্ট্রসংঘকে নালিশ জানিয়ে কূটনৈতিক ফায়দা পেতে চাইছে ইসলামাবাদ।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.