সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বিশ্বজুড়ে একদিকে যেমন নিজের সাম্রাজ্য বিস্তার করে চলেছে করোনা, তেমনই কয়েনের উলটো পিঠের মতো এই মারণ ভাইরাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধজয় করেছেন লক্ষাধিক মানুষ। হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেয়ে নিজেদের অভিজ্ঞতাও জানাচ্ছেন করোনাজয়ীরা। কিন্তু করোনাযোদ্ধা মাইকেল ফ্লোরের কাহিনি শুনে চোখ কপালে ওঠার জোগার সকলের!
বয়স ৭০। এই বয়সে কোভিড আক্রান্ত হলে প্রাণের ঝুঁকি থাকাটা অনিবার্য। তাঁর অর্থাৎ মাইকেল ফ্লোরেরও তাই ছিল। এমনকী একটা সময় এমনও আসে যখন আমেরিকার সিয়াটলের বাসিন্দা মাইকেলের অবস্থা রীতিমতো সংকটজনক হয়ে উঠেছিল। সিয়াটলের যে হাসপাতালে তিনি চিকিৎসাধীন ছিলেন, তার চিকিৎসক, এমনকী নার্সরাও তাই এক সময় মোবাইল ফোনে পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলিয়ে দিতেন বৃদ্ধকে। যাতে মাইকেল বিদায় নেওয়ার আগে স্ত্রী ও সন্তানদের দেখে যেতে পারেন। ঠিক সেই অবস্থা থেকেই ঘটেছিল মিরাকল। চিকিৎসায় সাড়া দিতে শুরু করেন বৃদ্ধ। এবং ৬২ দিন পর সুস্থ হয়ে ওঠেন।
কিন্তু সবচেয়ে বড় চমকটা হয়তো অপেক্ষা করে ছিল ঠিক তারপর। তা হল মাইকেলের চিকিৎসার মোট খরচ। ৪ মার্চ হাসপাতালে ভরতি এবং ৫ মে ছাড়া পাওয়া- এই দুটি দিনই যেন জীবনের অন্যতম বড় ‘শক’ পেলেন মাইকেল। কারণ ৭০ বছরের এই বৃদ্ধের হাসপাতালের ১৮১ পৃষ্ঠার বিল হয়েছে ১,১২২,৫০১.০৪ মার্কিন ডলার! অর্থাৎ প্রায় ১১ লক্ষ মার্কিন ডলার! এমন বিল দেখলে যে কোনও সুস্থ মানুষের অসুস্থ হয়ে পড়াটাই স্বাভাবিক। তাই করোনা জয় করেও মুখে হাসি ফোটেনি মাইকেলের। বরং বুক ফেটেছে।
তাঁকে দেওয়া বিলটিতে লেখা আছে, ইনটেনসিভ কেয়ার রুম ব্যবহারের জন্য দৈনিক ৯ হাজার ৭৩৬ ডলার করে খরচ হয়েছে। ৪২ দিনের জন্য জীবাণুনাশক ঘরে রাখার খরচ ৪,০৯,০০০ ডলার। ২৯ দিন ভেন্টিলেটর ব্যবহারের জন্য লেগেছে ৮২,০০০ ডলার এবং দু’দিনের বিশেষ দেখভাল তথা চিকিৎসার জন্য প্রায় ১,০০,০০০ ডলার ব্যয় হয়েছে। তবে স্বস্তি একটাই। এত বিল এলেও সৌভাগ্যজনকভাবে মাইকেলকে নিজের পকেট থেকে খরচের সব অর্থ দিতে হচ্ছে না। প্রবীণদের জন্য থাকা ইনস্যুরেন্স প্রোগ্যাম, ‘মেডিকেয়ার’ তাঁর চিকিৎসার এই বিপুল খরচ বহন করবে বলে জানা গিয়েছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.