ফাইল ফটো
সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ক্রমাগত রূপ বদলাচ্ছে প্রাণঘাতী ভাইরাস করোনা। কখনও উপসর্গ ছাড়াই মানবদেহে বাসা বাঁধছে এই ভাইরাস। কখনও আবার ১৪ দিন কোয়ারেন্টাইন শেষ হওযার পর কোনও ব্যক্তির শরীরে করোনার সন্ধান মিলছে। এখন আবার রক্ত জমাট বাঁধিয়ে দিচ্ছে করোনা। নিউ ইয়র্কের একটি হাসপাতালের চিকিৎসকরা কয়েকজন রোগীর শরীরে এমন পরিবর্তন লক্ষ্য করেছেন। কখনও রক্ত জমাট বাঁধছে মস্তিস্কে, কখনও ফুসফুসে, কখনও আবার অন্য কোনও অঙ্গে। ফলে মৃত্যু হচ্ছে রোগীর।
ওই হাসপাতালের চিকিৎসকরা রোগীর কিডনি ডায়াললিসিসে জমাট বাঁধা রক্ত পেয়েছেন। কয়েকজন করোনা আক্রান্ত ব্যক্তির ভেন্টিলেটর পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায় ফুসফুসের কিছু অংশ অদ্ভুতভাবে রক্তহীন। অনেকের আবার রক্তের জমাট বাঁধার কারণে স্ট্রোকের মুখোমুখি হয়েছেন। সেই সব আক্রান্তের বয়সও যথেষ্ট কম। হাসপাতালের চিকিৎসক ড: মক্কো জানিয়েছেন, এই রোগের ফলে রক্ত জমাট বেঁধে যাওয়া তাঁকে অবাক করেছে। তিনি আরও বলেছেন, সাধারণত চিকিৎসকরা মনে করছেন, COVID-19 ফুসফুসে হামলা করে। কিন্তু একজন তরুণ রোগীর ক্ষেত্রে স্ট্রোকই ছিল প্রথম লক্ষণ।
মার্চ মাসের মাঝামাঝি থেকে রোগীদের শরীরে এমন অদ্ভুত উপসর্গ দেখেন চিকিৎসকরা। ৩২জন রোগীর মস্তিষ্কে রক্ত জমাট বেঁধে স্ট্রোক হয়। তাঁদের মধ্যে পাঁচজনের বয়স ৪৯ বছরের নিচে। সর্বকনিষ্ঠ রোগীর বয়স ৩১ বছর। ওই ৩২ জনের প্রায় অর্ধেকের শরীরে করোনা ভাইরাসের সন্ধান মেলে। হাসপাতালের ফুসফুস বিশেষজ্ঞ ড: হুমান পুর জানিয়েছেন, ১৪ জন রোগীর ভেন্টিলেটরে রিডিং দেখে তিনি অবাক হয়ে যান। তিনি যা প্রত্যাশা করেছিলেন, তা একেবারই ছিল না। সাধারণ নিউমোনিয়ার ক্ষেত্রে ফুসফুসের যেমন থাকা উচিত, ওই রোগীদের ক্ষেত্রে তা ছিল না। প্রতিটি শ্বাসের সঙ্গে রক্ত ফুসফুসে ঠিকমতো সঞ্চালিত হচ্ছিল না। রক্ত জমাট বেঁধে যাচ্ছিল ফুসফুসে। কিডনিতেও রক্ত সঞ্চালনে সমস্যা হচ্ছিল। মাঝে মাঝে রক্ত জমাট বেঁধে ক্যাথিটার ব্লক হয়ে যাচ্ছিল।
এই সব ঘটনা প্রত্যক্ষ করার পর হাসপাতালের চিকিৎসকরা চিনের হুবেই প্রদেশের চিকিৎসকদের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। এছাড়া অন্য দেশের চিকিৎসকদের সঙ্গেও যোগাযোগ করা হয়। উত্তর আসে ফিলাডেলফিয়া থেকে। সেখানকার থমাস জেফারসন ইউনিভার্সিটি হাসপাতালের ড: পাস্কাল জাব্বার জানান, তিনিও করোনা রোগীদের স্ট্রোকের উপসর্গ দেখেছেন। অন্য কোনও ভাইরাসের ক্ষেত্রে এমন উপসর্গ দেখেননি বলেও জানা তিনি। চিকিৎসকরা জানিয়ছএ করোনার এই উপসর্গ রোগীরকে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দিচ্ছে দ্রুত। তবে এই রক্ত জমাট বাঁধা রোধ করতে কোনও ‘অ্যান্টি ক্লোটিং’ ড্রাগ ব্যবহার করা যায় কিনা তা এখনও পরীক্ষনীয়।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.