সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: গাজা দখল করার হুঁশিয়ারি আগেই দিয়েছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এবার যুদ্ধজর্জর গাজা থেকে ১০ লক্ষ প্যালেস্তিনীয়কে পাকাপাকিভাবে লিবিয়াতে পাঠিয়ে দেবে আমেরিকা! চলছে নাকি এমনই পরিকল্পনা। সম্প্রতি এক ভিডিও সোশাল মিডিয়ায় শেয়ার করেছিলেন ট্রাম্প। যেখানে ‘মৃত্যুপুরী’ গাজা হয়ে উঠেছে মায়ানগরী। হাওয়ায় উড়ছে টাকা। আর শহরজুড়ে শুধুই তাঁর মূর্তি। যেন মনে হচ্ছে, এই নতুন গাজা ট্রাম্পেরই। ফলে এই খবরে জল্পনা বাড়ছে যে,গাজা ফাঁকা করার কাজ শুরু করেছে আমেরিকা।
গত দু’দিনে ১২০ জনের বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে গাজায়। এর মধ্যে দক্ষিণ গাজার খান ইউনিসে বৃহস্পতিবার রাতের গোলাবর্ষণে মৃত্যু হয়েছে ৫৪ জনের। তার আগে বুধবার উত্তর ও দক্ষিণ গাজা মিলিয়ে প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত ৭০ জন। এই পরিস্থিতিতে গতকাল শুক্রবার মার্কিন চ্যানেল এনবিসি নিউজ এক রিপোর্টে দাবি করেছে, ট্রাম্প প্রশাসন একটি পরিকল্পনা করে ফেলেছে। আমেরিকা ১০ লক্ষ প্যালেস্তিনীয়কে গাজা থেকে লিবিয়ায় স্থায়ী পুনর্বাসন দেবে। এর বদলে ট্রাম্প সরকার লিবিয়ার প্রাপ্য কোটি কোটি ডলারের ফান্ড ছেড়ে দেবে। যা প্রায় এক দশক ধরে আটকে রয়েছে। ইতিমধ্যেই দু’দেশের মধ্যে আলোচনা হয়েছে। তবে এখনও চূড়ান্ত চুক্তি হয়নি। এই বিষয়টি ইজরায়েলকেও জানানো হয়েছে।
যদিও মার্কিন সরকারের এক মুখপাত্র এনবিসি নিউজকে জানিয়েছেন, “এই রিপোর্ট ঠিক নয়। এখন যা পরিস্থিতি তাতে এই ধরনের পরিকল্পনার বাস্তবায়ন সম্ভব নয়। এই সব কোনও আলোচনা হয়নি আমাদের।” গত ফেব্রুয়ারি মাসে আমেরিকায় গিয়েছিলেন ইজরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতিয়ানিয়াহু। সেই সময় পাশে নিয়েই ট্রাম্প হুঙ্কার দিয়েছিলেন, “আমেরিকা গাজার দখল নেবেই। প্যালেস্তিনীয়দের অন্যত্র পুনর্বাসিত করার পরে আমরা গাজার উন্নতি করব, সংস্কার করব। গাজায় যে বোমা, বিস্ফোরক রয়েছে সেগুলো সব ধ্বংস করব। এরপর সেখানে কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা আর্থিক উন্নয়ন ঘটাব। মানুষের মাথার ছাদ তৈরি করব। আমরা গাজা জয় করবই।” তারপরই ট্রাম্প প্রকাশ্যে আনেন সেই ভিডিও।
ফলে প্রশ্ন উঠছে এবার গাজার ভবিষ্যৎ নিয়ে। আমেরিকার এই খবরে জোর জল্পনা শুরু হয়েছে। নতুন করে সমীকরণ তৈরি হচ্ছে মধ্যপ্রাচ্যে। বিশ্লেষকদের মতে, ট্রাম্প গাজা নিয়ে যে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তা মোটেই ভালোভাবে নেবে না ইরান। গাজায় জেহাদের কোমর ভেঙে দখল নিয়ে নেওয়া মানে পরমাণু শক্তিধর তেহরানকেও বার্তা দেওয়া। কারণ হামাস, লেবাননের হেজবোল্লা, ইয়েমেনের হাউথিদের মদত দেওয়া, অস্ত্র জোগানোর অভিযোগ রয়েছে ইরানের বিরুদ্ধে। ইয়েমেনে হামলা তীব্র করেছে আমেরিকাও। ইজরায়েলের ছায়ায় থেকে এবার সরাসরি যুদ্ধে নামতে পারে ওয়াশিংটন।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.