সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ফের চিন-রাশিয়া-আমেরিকার সংঘাত। এবারের ইস্যু কাজাখস্তান (Kazakhastan)। মধ্য এশিয়ার সরকার বিরোধী প্রতিবাদে অশান্ত দেশটিতে রাশিয়ার সেনাবাহিনীর উপস্থিতি নিয়ে কড়া প্রতিক্রিয়া দিল আমেরিকা (US)। বাইডেন প্রশাসনের বিদেশসচিব অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন (Anthony Blinken) প্রশ্ন তুললেন, কাজাখস্তানের অশান্তির খবর পেয়েই কেন আগেভাগে রাশিয়া সেখানে সেনা মোতায়েন করল? নাম না করে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে বিঁধেছেন তিনি। এক্ষেত্রে নিজেদের অবস্থানও স্পষ্ট করেছেন ব্লিঙ্কেন। আমেরিকা মনে করে,নিজেদের দেশের সমস্যা নিজেরাই সামলাতে সক্ষম কাজাখ প্রশাসন। বরং রাশিয়ার অঙ্গুলিহেলনে সমস্যা বাড়তে পারে।
দিন দুই ধরে বিক্ষোভে উত্তপ্ত মধ্য এশিয়ার দেশ কাজাখস্তান। তেল উৎপাদনকারী দেশে আচমকা তেলেরই দাম মারাত্মক হারে বৃদ্ধি পাওয়ায় শুরু হয়েছে সরকার বিরোধী বিক্ষোভ। তার আঁচ বাড়তে থাকায় বিক্ষোভকারীদের ‘সন্ত্রাসবাদী’ আখ্যা দিয়েছেন দেশের প্রেসিডেন্ট। প্রেসিডেন্ট কাসিম জোমার্ট টোকায়েভ বিক্ষোভকারীদের উপর গুলি চালিয়ে হত্যার নির্দেশ দিয়েছেন সেনাকে। ইতিমধ্যেই ২৬ জনের বেশি সশস্ত্র বিক্ষোভকারীকে নিরাপত্তা রক্ষীরা হত্যা করেছে বলেও সরকারি তরফে জানানো হলেও, বিক্ষোভকারীদের আক্রমণে ১৮ জন পুলিশ ও ন্যাশনাল গার্ড সার্ভিস সদস্যও মারা গিয়েছেন বলে জানানো হয়েছে। সবথেকে বেশি উত্তপ্ত রাজধানী আলমাটি। প্রতিবেশীদের সাহায্য চেয়েছেন কাজাখ প্রেসিডেন্ট।
কাজাখস্তানের এই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পাশে দাঁড়িয়েছে রাশিয়া (Russia)। শুক্রবারই সেখানে পৌঁছে গিয়েছে ২৫০০ রুশ সেনা। অশান্ত এলাকাগুলিতে রীতিমতো ঘাঁটি গেড়ে বসেছে পুতিনের সেনাবাহিনী। আর তা নিয়েই প্রশ্ন তুলল আমেরিকা। মার্কিন প্রতিরক্ষা দপ্তরের এক সাংবাদিক সম্মেলনে বিদেশসচিব ব্লিঙ্কেন কার্যত হুঁশিয়ারির সুরে বলেন, ”সাম্প্রতিক ইতিহাস বলছে, একবার রাশিয়াকে যদি নিজের ঘরে ঢুকতে দেওয়া হয়, তো সেখান থেকে তাদের বের করা খুবই কঠিন। এই অবস্থার কথা মাথায় রাখতে হবে।” তাঁর আরও বক্তব্য, ”দেশের অশান্ত পরিস্থিতিতে আইনশৃঙ্খলা বজায় রাখতে যথাযথ পদক্ষেপ করেছেন প্রেসিডেন্ট। কিন্তু এটা স্পষ্ট নয় যে তিনি বাইরের কারও সহযোগিতা চেয়েছেন কি না। তার আগেই রাশিয়ার সেনা মোতায়েন কেন? আমরা সমগ্র পরিস্থিতি নজরে রাখছি।”
এই সংঘাত আরও বাড়িয়ে তুলেছে চিন। এবার কাজাখ প্রেসিডেন্টের দিকে সমর্থনের হাত বাড়াল চিন (China)। চিনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং (Xi Jinping) জানিয়ে দিয়েছেন, তাঁর পূর্ণ সমর্থন রয়েছে কাজাখ প্রেসিডেন্টের প্রতি। কাজাখস্তানে কোনও রকমের হিংসাত্মক ঘটনাকে বেজিং সমর্থন করে না বলে বিবৃতি দিয়েছেন জিনপিং। পরিষ্কার জানিয়ে দিয়েছেন, কাজাখের স্থিতিশীলতা, সুরক্ষা ও শান্তিপূর্ণ জনজীবনকে নষ্ট করতে বিচ্ছিন্নতাবাদী শক্তির যে কোনও রকম প্রয়াসের নিন্দা করছে চিন। ফলে কাজাখ নিয়ে রুশ-চিনের সঙ্গে আরও একপ্রস্ত দ্বন্দ্ব শুরু হল আমেরিকার।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.