সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: রাজনৈতিক উত্তেজনায় ফুটছে পাকিস্তান (Pakistan)। সংসদে সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারিয়েও গদি ছাড়তে নারাজ প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান নিয়াজি। দুর্নীতি ও অপশাসনের অভিযোগ উড়িয়ে সমস্ত সমস্যার জন্য আমেরিকাকেই দায়ী করেছেন তিনি। ইমরানের অভিযোগ, তাঁর সরকার ফেলতে ষড়যন্ত্র করছে ওয়াশিংটন। পালটা, মার্কিন বিদেশ দপ্তর সাফ জানিয়েছে এই সমস্য অভিযোগ মিথ্যা।
শুক্রবার এক সংবাদ সম্মেলনে ইমরান খানের সমস্ত দাবি উড়িয়ে দেন মার্কিন বিদেশ দপ্তরের মুখপাত্র জেলিনা পোর্টার। তিনি বলেন, “আমরা অত্যন্ত স্পষ্টভাবে জানাচ্ছি যে এই সমস্ত অভিযোগ (ইমরানের দাবি) সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। হ্যাঁ, এটা সত্যি যে পাকিস্তানের ঘটনাবলির উপর আমরা নজর রাখছি। তবে পাকিস্তানের সাংবিধানিক প্রক্রিয়া ও আইনকে আমরা সম্মান এবং শ্রদ্ধা করি। কিন্তু ফের আমি সাফ জানিয়ে দিচ্ছি (ইমরানের) অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা।” বিশ্লেষকদের মতে, ইসলামাবাদে গণতান্ত্রিক সরকার চায় আমেরিকা। তবে সম্প্রতি পাক প্রধানমন্ত্রীর রুশ সফর ঘিরে বিরক্ত মার্কিন নীতিনির্ধারকরা। পাশাপাশি, চিনের সঙ্গে ইমরানের দহরম মহরম ও সন্ত্রাসবাদ ইস্যুতেও বিরক্ত বাইডেন প্রশাসন।
উল্লেখ্য, শনিবার অর্থাৎ আজ মরণবাঁচন পরিস্থিতি ইমরানের। ইমরান মসনদে থাকবেন কিনা তা আজ পরিষ্কার হতে পারে। কিন্তু পরিস্থিতি যা, গদি বাঁচানো প্রায় অসম্ভব তাঁর। এহেন পরিস্থিতিতে গতকাল জাতির উদ্দেশে ভাষণে ভারতের ঢালাও প্রশংসা করেন ইমরান। তিনি বলেন, ”স্বাভিমান কাকে বলে তা ভারতের থেকে শিখুক পাকিস্তান। কোনও সুপার পাওয়ার দিল্লির উপরে হুকুম চালাতে পারে না।” তাঁর কথা থেকে পরিষ্কার, তিনি তাঁর পদ হারানোর জন্য আমেরিকাকেই কাঠগড়ায় তুলছেন। এদিকে তাঁর অনুরাগীদের পথে নামার আহ্বানও জানিয়েছেন ইমরান।
প্রসঙ্গত, গত ৩ এপ্রিল ইমরানের বিরুদ্ধে বিরোধী দলগুলোর আনা অনাস্থা প্রস্তাব ‘অসাংবিধানিক’ আখ্যা দিয়ে খারিজ করে দেন জাতীয় সংসদের ডেপুটি স্পিকার কাসিম সুরি। পরে প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শে পার্লামেন্ট ভেঙে দেন প্রেসিডেন্ট। ওই দিনই এ নিয়ে সুয়োমোটো শুনানি গ্রহণ করেন সর্বোচ্চ আদালত। পাঁচ দিনের শুনানি শেষে অনাস্থা প্রস্তাব খারিজ ও জাতীয় পরিষদ ভেঙে দেওয়ার সিদ্ধান্ত অসাংবিধানিক ঘোষণা করে সর্বসম্মত রায় দেন প্রধান বিচারপতি নেতৃত্বে পাঁচ বিচারপতির বৃহত্তর বেঞ্চ।
কেন সর্বোচ্চ আদালত এ পথে হাঁটল? প্রথমত, প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে আনা অনাস্থা প্রস্তাব খারিজ করে দিয়েছেন জাতীয় সংসদের ডেপুটি স্পিকার। আইন অনুযায়ী তাঁর এ ধরনের ক্ষমতা নেই। দ্বিতীয়ত, প্রধানমন্ত্রীর সুপারিশে পার্লামেন্ট ভেঙে দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট। পাকিস্তানে পার্লামেন্ট পুনর্বহালে সুপ্রিম কোর্টের আদেশের পর থেকেই উল্লাসে মেতেছে ইমরান-বিরোধী শিবির। একে গণতন্ত্রের বিজয় হিসাবে দেখছে তারা।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.