সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: নিজেদের দেশের মাটিতে মার্কিন সেনার স্বেচ্ছাচারী মনোভাব মানব না। প্রয়োজনে নিজেদের ‘জান’ দিয়েও মাতৃভূমির আব্রু রক্ষা করব। এই ভাষাতেই পেন্টাগনকে হুঁশিয়ারি দিল ইসলামাবাদ।
আমেরিকার বিরুদ্ধে পাক সেনার মুখে এই ভাষা শেষ কবে শোনা গিয়েছে, মনে করতে পারছেন না আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশেষজ্ঞরা। তবে তাঁদের মতে, ট্রাম্প প্রশাসন সন্ত্রাস ইস্যুতে যেভাবে পাকিস্তানকে তুলোধোনা করছে, এই ভাষায় জবাব তারই ফল। পাক বিদেশমন্ত্রী খোয়াজা আসিফ মন্তব্য করেছেন, ‘আফগানিস্তানে যে তাদের পরাজয় হয়েছে সেটা মানতে হবে আমেরিকাকে। ১৬ বছর ধরেই ওরা হারছে। আমেরিকা তখনই উন্নতি করতে পারবে যখন তারা মেনে নেবে যে আফগানিস্তানে তাদের সেনাকে নাস্তানাবুদ হতে হয়েছে।’
নয়াদিল্লির আবেদনে সাড়া দিয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সন্ত্রাসবাদে রাশ টানতে নির্দেশ দিয়েছেন ইসলামাবাদকে। মার্কিন সেনা হুঁশিয়ারি দিয়েছে, পাকিস্তান যদি দেশের মাটিতে সন্ত্রাসবাদে লাগাম না পরাতে পারে তাহলে আমেরিকাকে বাধ্য হয়েই আসরে নামতে হবে। এই হুঁশিয়ারি পেয়েই পাক সেনা কর্তাদের রাতের ঘুম ছুটেছে। লাদেনকে হত্যা করতে ২০১১-তে পাকিস্তানের মাটিতে ‘অপারেশন নেপচুন স্পিয়ার’ চালিয়েছিল আমেরিকা। সেদিনের কথা আজও পাক সেনাকর্তাদের দুঃস্বপ্নের মতো ফিরে ফিরে আসে। এবার লাদেন সমকক্ষ আর এক কুখ্যাত আন্তর্জাতিক জঙ্গি হাফিজ সইদকে নিকেশ করতেও একইমাপের অপারেশন চালাতে তৈরি হচ্ছে আমেরিকা, এমনটাই মনে করে ইসলামাবাদ। গত মাসেই ‘পাকিস্তান জঙ্গিদের নিরাপদ আশ্রয়’ বলে মন্তব্য করেন সিআইএ-র ডিরেক্টর মাইক পম্পেও।
আর তাই পাক সেনার মনোভাবকে চাঙ্গা রাখতে আসরে নামতে হল পাক সেনাপ্রধানের মুখপাত্র মেজর জেনারেল আসিফ গফুরকে। সংবাদমাধ্যমকে জানালেন, ‘বন্ধু রাষ্ট্রের সেনার সঙ্গে সৌজন্যমূলক আচরণ করে পাক সেনা। কিন্তু সেই আচরণকে দুর্বলতা ভাবলে চলবে না। জাতীয় মর্যাদার সঙ্গে কখনই আপস করবে না পাকিস্তান। দেশের নিরাপত্তাকে ঝুঁকির মুখে ফেলতে পারব না আমরা।’ প্রয়োজনে মার্কিন সেনার বিরুদ্ধে সংঘাতের পথে হাঁটবে পাকিস্তান, ইঙ্গিত সেনার। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, পাক সেনার এই ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণের পিছনে রয়েছে চিনের প্রশ্রয়। জঙ্গিদের সঙ্গে পাক সেনার আঁতাঁতের অভিযোগে ইসলামাবাদকে অত্যাধুনিক সামরিক সরঞ্জাম দিতে চায় না আমেরিকা। সেই ঘাটতি পুষিয়ে দিতে চিন তাদের অত্যাধুনিক ড্রোন দিচ্ছে পাকিস্তানকে। দিচ্ছে অন্যান্য অস্ত্রও। বেজিংয়ের প্রশ্রয় পেয়েই আজ আমেরিকাকেও চোখ রাঙানোর সাহস পেয়ে গিয়েছে পাকিস্তান, এমনটাই মনে করছেন সামরিক বিশেষজ্ঞরা।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.