সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: চিনের ক্ষমতায় অমরত্বের ব্যবস্থা সেরে ফেললেন শি জিনপিং। এখন থেকে তিনিই আমৃত্যু চিনের সর্বোচ্চ পদে। এই নিয়ে সংসদে বিলও পাশ হয়ে গেল। রবিবার পঁচানব্বইভাগে প্রতিনিধি তাঁর পক্ষে ভোট দেন। এর ফলে কার্যত প্রেসিডেন্টের পদের আর তেমন গুরুত্ব থাকছে না। মাও জে দং-এর পথে হেঁটে জিনপিং চিনের সর্বেসর্বা হতে চলেছেন।
[কথা রাখবেন কিম, চিরশত্রুর উপরই শেষমেশ ভরসা ট্রাম্পের]
ক্ষমতায় আসার মাত্র ৬ বছরের মধ্যে তাঁর এই উত্থান চোখে পড়ার মতো। ২০১২ সালে চিনের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন জিনপিং। একই সঙ্গে তিনি চিনের কমিউনিস্ট পার্টির সাধারণ সম্পাদকও। জিনপিংয়ের জমানায় চিনের বৃদ্ধি এবং কূটনৈতিক স্তরে তৎপরতা গোটা দুনিয়ার নজর কেড়ে নেয়। কূটনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করেন জিনপিংয়ের হাত ধরে চিন এক নতুন জাগরণ দেখা দিয়েছে। শক্তিধর দেশ হিসেবে বিশ্বের কাছে চিন সম্ভ্রম কুড়িয়েছে। একদম সামনে থেকে জিনপিং নেতৃত্ব দিচ্ছেন। পাশাপাশি দেশকে দুর্নীতিমুক্ত ব্যাপক ধরপাকড়ও শুরু করেছেন। সংসদে নিরঙ্কুশ সমর্থন নিয়ে পাশ হয় বিলটি। প্রায় তিন হাজার প্রতিনিধির মধ্যে ২,৯৫৮ জন প্রেসিডেন্টের মেয়াদ বিলুপ্তির পক্ষে ভোট দেন। গত বছরের অক্টোবরে চিনের পিপলস পার্টি জিনপিংয়ের চিন্তাধারাকে দলীয় গঠনতন্ত্রে স্থান করে দেয়। তখনই তাঁকে চিনের কমিউনিস্ট পার্টির প্রতিষ্ঠাতা মাও জে দংয়ের সমান মর্যাদা দেওয়া হয়েছিল।
[চিরশত্রু কিমের সঙ্গে বৈঠকে রাজি ট্রাম্প! পরমাণু নিরস্ত্রীকরণে ‘হ্যাঁ’ কোরিয়ার]
জিনপিং যে প্রবল শক্তিধর হতে চলেছেন তা গত কয়েক মাসে ইঙ্গিত মিলিছিল। ধাপে ধাপে নিজেকে সর্বময় কর্তৃত্বের দিকে নিয়ে চলেছেন জিনপিং। চিনের সংবিধান অনুযায়ী একটানা দু’বারের বেশি প্রেসিডেন্ট পদে থাকা যায় না। সেই বিধি শিথিল করতেই জিনপিং এই পথে হাঁটলেন। তাঁর জন্যই ১৪ বছর পর সংবিধান সংশোধন করা হল। আধুনিক চিনের রূপকার হিসেবে ধরা হয় মাও জে দংকে। মাওয়ের পর জিনপিং হলেন দ্বিতীয় ব্যক্তি, যিনি ক্ষমতাসীন অবস্থায় এমন মর্যাদা পেলেন। মাও জে দংয়ের চিন্তাধারা মাওবাদ হিসেবে বিবেচিত হয়। একইভাবে শি-র চিন্তাধারাও শি-বাদ হিসাবে দেখা হচ্ছে। এই মতবাদের বিরুদ্ধে চিনে কোনও চ্যালেঞ্জ জানানো যায় না। কেউ কিছু করলে তা কমিউনিস্ট পার্টির বিরুদ্ধ অবস্থান বলে বিবেচিত হয়।
[বেতন কমানো হোক, কানাডার ডাক্তারদের আন্দোলনকে কুর্নিশ বিশ্বের]
নিয়মমাফিক দু’দফার পর জিনপিংয়ের পদ ছেড়ে দেওয়ার কথা। কিন্তু শি যাতে ২০২৩ সালের পরেও প্রেসিডেন্ট থাকতে পারেন। এমনকী যত দিন ইচ্ছা, তত দিনই থাকতে পারেন তার জন্য দেশের সংবিধান সংশোধন করা হল। পার্টির সাধারণ সম্পাদক এবং সেন্ট্রাল মিলিটারি কমিশনের চেয়ারম্যান পদেও দু’বারের বেশি থাকার ব্যবস্থা নেই চিনে। কিন্তু সেই প্রাচীরও আর ৬৪ বছরের জিনপিংয়ের সামনে থাকল না। এখন থেকে শি এবং চিনা কমিউনিস্ট পার্টি যেন একই মুদ্রার এপিঠ-ওপিঠ। তবে সমালোচকরা বলছেন চিনের সংসদ সদস্যরা আসলে রাবার স্ট্যাম্প। শি-এর ইচ্ছা তাদের শিরোধার্য। অতএব বিপ্লব নয়, আসলে একনায়কতন্ত্র দীর্ঘজীবী হল।
[নৈতিক পতনের কারণ মোবাইল, বাংলাদেশের মাদ্রাসায় পোড়ানো হল দু’হাজার ফোন]
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.