সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: হিজাব কাণ্ডে উত্তাল ইরান (Iran)। হিজাব না পরার কারণে মাহশা আমিনি নামের এক তরুণীকে পিটিয়ে মারে পুলিশ। আর তারপর থেকেই দেশজুড়ে শুরু হয়েছে প্রতিবাদ। বিক্ষোভের আগুন ছড়িয়ে পড়েছে সর্বত্র। রাজধানী তেহরান-সহ অন্তত ৪০টি শহরে শুরু হয়েছে আন্দোলন। স্বাভাবিক ভাবেই প্রবল চাপে সেদেশের প্রশাসন।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে ইন্টারনেট পরিষেবা। মাহশার ভয়ংকর পরিণতির কথা প্রথম যিনি প্রকাশ্যে আনেন, সেই মহিলা সাংবাদিক নিলোফার হামেদিকে গ্রেপ্তার করেছে ইরানের পুলিশ। কিন্তু তবু বিক্ষোভকে প্রশমিত করা যায়নি। মনে করা হচ্ছে, গত কয়েক দশকের মধ্যে এটাই সেদেশের সবচেয়ে বড় গণ অভ্যুত্থান। বিশেষ করে তরুণ-তরুণীদের যেভাবে পথে নামতে দেখা যাচ্ছে, তেমনটা আর কখনও হয়নি বলেই ধারণা ওয়াকিবহাল মহলের। তাঁদের হাতে হাতে ঘুরছে প্ল্যাকার্ড ‘আমরা সবাই মাহশা’।
শনিবার পর্যন্ত অন্তত গ্রেপ্তার অন্তত ১২০০ জন। তেমনটাই দাবি ইরানের সরকারি সংবাদমাধ্যমের। এমনকী, নিরাপত্তা রক্ষীদের সঙ্গে সংঘর্ষে বেশ কিছু মৃত্যু হয়েছে বলেও দাবি। সেই সংখ্যাটা কত তা নিয়ে মতান্তর রয়েছে। ইসলামিক রিপাবলিক অফ ইরান ব্রডকাস্টিংয়ের দাবি, মারা গিয়েছেন ৩৫ জন। অনেকের মতে, সংখ্যাটা আরও বেশি।
এর আগে ২০০৯ সালে কিংবা ২০১৯ সালেও গণ বিক্ষোভ চরম আকার নিয়েছিল ইরানে। কিন্তু এবারের বিক্ষোভ সেগুলির চেয়ে আলাদা। বিশেষত দেশের তরুণ সম্প্রদায় যেভাবে পথে নেমেছে তা এর আগে দেখা যায়নি।
স্বাভাবিক ভাবেই ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা চলছে পুরোদমে। মাহশা আগেই অসুস্থ ছিল বলে সরকার চালানোর চেষ্টা করছে বলে দাবি তাঁর পরিবারের। বিবিসিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে মৃতা তরুণীর বাবা দাবি করেছেন, কোনও রকম অসুস্থতাই ছিল মাহশার। ঘটনার দিন তাঁর মেয়ের সঙ্গে পুলিশ কেমন আচরণ করেছিল তা তাঁর কিশোর পুত্র দেখেছে বলেই দাবি তাঁর। মেয়ের সমস্ত স্বপ্ন এভাবে শেষ হয়ে যাবে তা তিনি ভাবতেও পারেননি বলেই দাবি মাহশার বাবার। তবে তাঁর মেয়ের মৃত্যু যে এত মানুষকে এভাবে পথে নামিয়ে আনবে সেটাও তিনি নিশ্চিত ভাবেই ভাবতে পারেননি। যে বিক্ষোভের সামনে অসহায় পড়ছে ইরানের রক্ষণশীল সরকারও।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.