শুভময় মণ্ডল: রাতের কলকাতায় নতুন আতঙ্ক। চুরি, বা লুটতরাজ নয়, কোনও প্রতারণা বা পাচারচক্রও নয়। এ এক অন্য চক্র। আর্থিক দিক থেকে লাভবান হওয়া নয়, বরং শত্রুর ক্ষতি করায় এখানে মূল উদ্দেশ্য দুষ্কৃতীদের। অভাবনীয় এই প্রতারণা চক্রের রহস্য ভেদ করতে এখন রীতিমতো হিমশিম খেতে হচ্ছে কলকাতা পুলিশকে।
ঘটনাটা কী? উত্তর কলকাতায় পার্কিং একটি গুরুতর সমস্যা। যার ফলে, অনেক সময় দামি গাড়ি বা বাইক ফাঁকা রাস্তাতেই রেখে দিতে হয়। দুষ্কৃতীরা টার্গেট করছে ওই গাড়ি এবং বাইকগুলিকেই। রাত একটু গাঢ় হতেই উত্তর কলকাতার বিস্তীর্ণ অঞ্চলে অবাধ বিচরণ শুরু হয় দুষ্কৃতীদের। উদ্দেশ্য, প্রতিহিংসা চরিতার্থ করা।কী করছে দুষ্কৃতীরা? পার্কিং স্লট না থাকায় যে সমস্ত গাড়ি বা বাইক ফাঁকা রাস্তায় রেখে দেন মালিকরা, সেগুলি জ্বালিয়ে দিচ্ছে তাঁরা।এতটাই সন্তর্পণে কাজ করা হচ্ছে, যে বাড়ির সামনে গাড়িটি রাখা থাকলেও টের পাচ্ছেন না গৃহকর্তা। আবার গাড়ি বা বাইকটিকে পুরোপুরি জ্বালিয়ে দেওয়াও উদ্দেশ্য নয়। বাহনটি আংশিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করেই ক্ষান্ত হচ্ছে অপরাধীরা। ঠিক কী উদ্দেশ্যে এই কাজ করা হচ্ছে, বা এর পিছনে কারা রয়েছে, সে রহস্য এখনও ভেদ করা যায়নি। স্থানীয়রা জানাচ্ছেন, গত প্রায় ২ সপ্তাহ ধরে নিয়মিত হাতিবাগান-সহ উত্তর কলকাতার একাধিক জায়গায় বেশ কয়েকটি এই ধরনের ঘটনা ঘটেছে। রাতের দিকে, কেউ বা কারা আগুন লাগিয়ে দিচ্ছে প্রাইভেট কার বা বাইকে। বাড়ির বাইরে বা খোলা গ্যারেজে গাড়ি থাকলেও রক্ষে নেই।
ইতিমধ্যেই ঘটনা সম্পর্কে তথ্য পেয়েছে পুলিশ। কিন্তু এখনও অপরাধীদের নাগাল পাওয়া যাচ্ছে না। হাতিবাগান এলাকার এক বাসিন্দা জানাচ্ছেন, গত শনিবার রাতে তাঁর বাড়িতে ঢুকে গাড়িতে আগুন লাগিয়ে দেয় অজ্ঞাত পরিচয় ‘ফায়ার-গ্যাং’। তাঁর এক প্রতিবেশীর গাড়িতেও আগুন লাগানো হয়েছে। দুটি গাড়িই আংশিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। স্থানীয় শ্যামপুকুর থানাকেও জানানো হয়েছিল ঘটনার কথা। ওই ব্যক্তি জানিয়েছেন, শুধু হাতিবাগান নয়, গত প্রায় সপ্তাহ দুয়েক ধরে উত্তর কলকাতার একাধিক এলাকায় গাড়ি বা বাইক পুড়িয়ে দেওয়ার ঘটনা ঘটছে। আমহার্স্ট স্ট্রিট থানা এলাকায় বেশ কয়েকটি বাইক পুড়িয়ে দেওয়ার ঘটনাও তিনি জানিয়েছেন পুলিশে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.