রিংকি দাস ভট্টাচার্য: যাই যাই করেও শীত পুরোপুরি পাততাড়ি গোটায়নি। ভোরে-রাতের হালকা শিরশিরানিতে তারই আমেজ ধরা পড়ছে। তবে সে সুখও আর খুব বেশি দিন নয়। আলিপুর আবহাওয়া দপ্তরের পূর্বাভাস, দিনের তাপমাত্রা এবার ধীরে ধীরে বাড়তে শুরু করবে। কাকভোরে ঠান্ডার রেশও বিদায় নেবে শীঘ্রই। অর্থাৎ, শেষের সেদিন সমাগত। কিন্তু এই মরশুমের শীত সত্যিই মনে রাখার মতো। বিদায়বেলায়ও সেটা স্পষ্ট। গত চার বছরের তুলনায় তার স্থায়িত্ব বেড়েছে। বস্তুত, মঙ্গলবারের পর বুধবারও বাড়ল শহরের তাপমাত্রা৷ তার আগের তিন বছরে এই একই ধারা অব্যাহত ছিল। ২০১৭ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি শহরের তাপমাত্রা ছিল ১৬.৯ ডিগ্রি। তার আগের বছর অর্থাৎ ২০১৬ সালে ছিল আরও খানিকটা কম ১৬.৬। ২০১৫ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি ১৭-র কোঠায় চড়েছিল শহরের তাপমাত্রা।
আগামী কয়েকদিনে শহরের তাপমাত্রা ২-৩ ডিগ্রি বাড়ার পূর্বাভাস দিয়েছেন আবহাওয়াবিদরা। যদিও গত কয়েকদিন ধরেই পারদ চড়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়ে গিয়েছে। তা শুধু শহর কলকাতা নয়, এই ছবি গোটা রাজ্যের। উত্তুরে হাওয়ার জোগান বন্ধ হয়ে যাওয়ায় এবং পাশাপাশি পশ্চিমি গরম হাওয়া পরিমণ্ডলে ঢুকে পড়ায় হঠাৎ উধাও শীতের আমেজ। শুধু শহর নয়, সমস্ত দক্ষিণবঙ্গ জুড়েই কমবেশি একই ছবি। আবহাওয়া বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, আর শীত ফেরার সম্ভাবনা প্রায় নেই। বরং তাপমাত্রা রোজই বাড়বে একটু একটু করে। তবে রাতে এবং সকালের দিকে শীত অনুভূত হবে।
দিনে অস্বস্তিকর আবহাওয়ার জেরে গায়ে সোয়েটার রাখা যাচ্ছে না। আর সূর্য ডুবতেই স্নিগ্ধ হাওয়ায় গা ভাসাচ্ছেন সকলে। সন্ধ্যায় মনজুড়ানো সেই বাতাসের ঠেলায় সকালে ঘুম ভাঙছে নাক জ্বালা আর গলা খুশখুশ নিয়ে। তাপমাত্রার তারতম্যে ঘরে ঘরে সর্দি-কাশি-গলাব্যথা-জ্বরে নাজেহাল আট থেকে আশি। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, গরম পোশাক খোলা আর পরার ব্যবধানের জেরেই শরীরে ঘাঁটি গাড়ছে নানা ধরনের অসুখ। ভাইরাল জ্বরের পাশাপাশি প্রকোপ বাড়ছে ‘চেস্ট ইনফেকশন’-এর৷ বুকে হঠাৎ করে সর্দি বসে শ্বাসকষ্টের সমস্যা দেখা দিচ্ছে শিশুদের। একইসঙ্গে শীতে শিশুরা জল খেতে না চাওয়ায় ‘ডিহাইড্রেশন’-এর শিকার হচ্ছে। প্রকোপ বেড়েছে অ্যালার্জিজনিত সমস্যার। চিকিৎসকদের আশঙ্কা, দক্ষিণবঙ্গজুড়ে বসন্তের আবহে জীবাণুজনিত সংক্রমণ আগেভাগেই ঢুকে পড়বে রাজ্যে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.